দুদক সংস্কারের সাত প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো একমত

এসবিনিউজবিডি ডেস্ক: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম পর্যায়ের বৈঠক শেষে সার্বিক বিষয় বিস্তারিত জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ। ঐকমত্য কমিশনে কোনো কোনো বিষয়ে দলগুলো একমত পোষণ করেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানান তিনি। প্রত্যেকটা সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে সেগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে।

সোমবার (২৬ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষে সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজের সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।

ঐকমত্য কমিশন জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সবগুলো সুপারিশের পক্ষেই মোটাদাগে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে :

১. রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধসংক্রান্ত আইন প্রণয়নের সুপারিশের বিষয়ে সব দল একমত পোষণ করেছে।

২. দুদকের স্বাধীনতা, কার্যকরতা ও গতিশীলতার পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা, নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত সব সুপারিশমালা সম্পর্কে প্রায় সব দলই সম্পূর্ণ একমত। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদককে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করার প্রস্তাবে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করেছে। দু একটি দল বিষয় নিয়ে নির্বাচিত সংসদে আলোচনা হতে পারে বলে মত দিয়েছে।

৩. দুর্নীতিবিরোধী ন্যায়পালের পদ সৃষ্টি করে ন্যায়পালকে দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্রের যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতায়িত করার প্রস্তাবে অধিকাংশ দল নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছে তবে এই বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে গেছে কেননা, কোনো কোনো দল এই বিষয়ে আংশিক একমত।

৪. রাজনৈতিক ও নির্বাচনি অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আনীত প্রস্তাবে নীতিগতভাবে বা আংশিক একমত হয়েছে সবগুলো দল।

৫. সেবা প্রদানকারী সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা কার্যক্রম ও তথ্য-ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ (অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড) অটোমেশনের আওতায় আনার প্রস্তাবে সব দল একমত পোষণ করেছে। 

৬. কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার রোধে বাংলাদেশকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কমন রিপোর্টিং, স্ট্যান্ডার্ড ও উন্মুক্ত সরকার ব্যবস্থায় সহায়ক হিসেবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে ওপেন গভর্নমেন্ট পার্টনারশিপের পক্ষভুক্ত হওয়ার প্রস্তাবে অধিকাংশ দল একমত পোষণ করেছে।

৭. ইউএন কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশনের অনুচ্ছেদ ২১ অনুসারে বেসরকারি খাতের ঘুষ লেনদেনকে স্বতন্ত্র অপরাধ হিসেবে শাস্তির আওতায় আনার সুপারিশের বিষয়ে সব দল একমত পোষণ করেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদনের প্রিন্ট কপি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের কাছে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে গত ৫ মার্চ ৫টি কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে তাদের মতামত প্রদানের জন্য প্রেরণ করে। ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশ ছিল ৭০টি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সুপারিশ ছিল ২০টি।